Showing posts with label Keigo Higashino. Show all posts
Showing posts with label Keigo Higashino. Show all posts

Thursday, 7 March 2019

Salvation of a saint-1



  .

টবে লাগানো প্যানজি* গুলো ফুটেছিলোছোটখাটোকিন্তু সেই তুলনায় বেশ উজ্জ্বলভাবেই শুকনো মাটি সত্বেও সেই উজ্জ্বলতা কমেনি  ফুলগুলো জমকালো না যদিওতবে অনেক কষ্টসহিষ্ণু বারান্দার কাঁচের স্লাইডিং দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ভাবল আয়ানে  সুযোগ পেলেই পানি দিবো ওদের


এতক্ষন আমি যা বলেছি, তা কি শুনতে পেরেছ ?” ইয়োশিতাকা জিজ্ঞেস করল

আয়ানে ঘুরে দাঁড়ালো, দুর্বলভাবে হেসে বলল, “ হ্যাঁ সব শুনেছি। শুনব না কেন ?”

তাহলে তোমাকে একটু দ্রুত উত্তর দিতে হবে সোফায় আলস্যভরে বসে ইয়োশিতাকা বলল সে হাঁটু দুটো বারবার ক্রসের মত করে ভাঁজ করছিল , আবার খুলে ফেলছিল এই ব্যায়ামটা করছিল পায়ের মাংসপেশী কমানোর জন্য যাতে তার পছন্দের স্লিম কাট ট্রাউজারগুলো সে পড়তে পারে  


 “মনে হয় আমি ভাবনার জগতে হারিয়ে গিয়েছিলাম

তাই ? তুমি সেরকম নও ভ্রু তুলে তার স্বামী বলল

আসলে তুমি যা বললে, তা বেশ অপ্রত্যাশিতই ছিল

আমার সেটা বিশ্বাস করতে একটু কষ্ট হচ্ছে এতদিনে আমার জীবনের পরিকল্পনা সম্পর্কে তোমার পরিচিত থাকার কথা

পরিচিত...হতেও পারে

তুমি কী বলতে চাইছ ?” সোফার দুপাশে হাত এলিয়ে দিয়ে চিন্তিত সুরে ইয়োশিতাকা বলল আয়ানে বুঝে উঠতে পারলনা , সে কি অভিনয় করছে , নাকি  আসলেই সে নির্বিকার ছিল

এটা কী সত্যিই তোমার জন্য একটা বড় সিদ্ধান্ত ?”

বড় সিদ্ধান্ত....মানে ?”

বাচ্চাকাচ্চা নেয়া

  ইয়োশিতাকা একটু মুখ বাঁকা করে উপহাসমূলক একটা হাসি দিল , দিয়েই চোখ সরিয়ে নিল এরপর আয়ানের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করল,
তুমি আমার কথা একটুও শোনোনি, তাইনা ? ”

আমি শুনছিলাম কঠোরভাবে তাকিয়ে বলল আয়ানে , যাতে তার স্বামী লক্ষ্য করে ব্যাপারটা সেজন্যই আমি জিজ্ঞেস করলাম

ইয়োশিতাকার মুখ থেকে হাসিটা মুছে গেল সে আস্তে মাথা নাড়ল।  “ এটা আসলেই  বড় একটা সিদ্ধান্ত অনেক অনেক বড় দরকারিও বলতে পারো যদি আমাদের সন্তানাদিই না হয় , তবে আমাদের বিবাহিত জীবনের কোনো উদ্দেশ্যই থাকবেনা পুরুষ মহিলার মধ্যে যে ভালবাসা থাকে , তা সময়ের সাথে সাথে বিলীন হয়ে যায় একজন পুরুষ মহিলা বিয়ে করে স্বামী স্ত্রী হয় তাদের সন্তানাদি হবার পর তারা বাবা-মা হয় তখনই তারা সত্যিকার অর্থে জীবনসংগী  হয় তুমি কি এই ব্যাপারে একমত নও ? ” 


আমার মনে হয়না বিবাহিত জীবন মানে শুধু এতটুকুই  

ইয়োশিতাকা মাথা নাড়লো , “ আমার কিন্তু তাই মনে হয় আমি বেশ শক্তভাবেই এটা বিশ্বাস করি এবং  সেই বিশ্বাস পাল্টানোর কোনো চিন্তা আমার মাথায় নেই   সেজন্যই আমি বলতে চাচ্ছি , যদি তুমিও একমত না হও এতে, তবে আমার  বিবাহিত  থাকার কোনো  ইচ্ছে নেই  


আয়ানে হাত দিয়ে কপালটা চাপ দিয়ে বোলাতে থাকলো কিছুক্ষন হঠাৎ করে তার  মাথা ব্যথা শুরু হয়েছে তাহলে তুমি বলতে চাচ্ছ , বাচ্চাকাচ্চা জন্ম দিবেনা , এমন মেয়ের সাথে সংসার করার তোমার কোনো ইচ্ছে নেই তাই আমাকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে নতুন কাউকে বেছে নিবেযে বাচ্চাকাচ্চা জন্ম দিবে তোমার জন্য ? --- সেটাই ?  ”

এত কড়াভাবে বলার দরকার আমি দেখছিনা   ”

কিন্তু তুমি সেটাই বোঝাতে চাচ্ছ !   ”

ইয়োশিতাকা এবার সোজা হয়ে বসল ঠোঁট বাঁকিয়ে মাথা নাড়তে নাড়তে বলল, “ হ্যাঁ আমি জানি , তোমার দৃষ্টিভংগী থেকে কথাগুলো শুনতে অন্যরকম লাগছে  কিন্তু  তোমার  বুঝতে হবে, আমি আমার জীবনের প্ল্যানটুকু খুব গুরুত্বের সাথে দেখি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব আমি এটাতেই দিই

আয়ানের মুখ এবার খুলে গেল , “ এটা মানুষকে বলে তুমি খুব আনন্দ পাও, তাইনা ? তুমি তোমারজীবনের প্ল্যানটুকু খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখো --  আমার সাথে প্রথম দেখা হবার সময়ও সেটা বলেছিলে

এত ব্যস্ত হবার কি আছে আয়ানেতুমি যা চাও সবই আছে তোমার যদি আমি কিছু ভুলে থাকি , আমাকে সেটা মনে করিয়ে দিও আমি তোমার জন্য সব কিছু করতে রাজি আছি কাজেই , এসব ফ্যাসাদ থামাও এবং ভবিষ্যতের কথা ভাবতে শুরু করো , ঠিক আছেনাকি তুমি অন্য কোনো পথ দেখবে ?  ”

আয়ানে দেয়ালের দিকে মুখ ফেরালো দেয়ালে টাঙ্গানো কারুকাজ করা পর্দাটার দিকে তার চোখ পড়লো পর্দাটা বানাতে তার প্রায় তিন মাস লেগেছে ; কাপড়টা স্পেশাল অর্ডার দিয়ে ইংল্যান্ড থেকে আনানো হয়েছে  


ইয়োশিতাকার এত কিছু না বললেও চলত সে জানে, জীবনে বাচ্চাকাচ্চা কতটা জরুরি সে অধির আগ্রহেই বাচ্চাকাচ্চা চায় কতবার আয়ানে স্বপ্ন দেখেছে , রকিং চেয়ারে দুলতে দুলতে , হাতে উলের কাটা আর সুতো নিয়ে ব্যস্ত থাকতে থাকতে সে নিজের পেটে সন্তানকে বড় হতে দেখবে  !

কিন্তু ইশ্বর এর  খামখেয়ালিতে সেটা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে তাই আয়ানে স্বপ্নটাকে মনে মনে বিসর্জন করেছে এমন না যে, তার কোনো সুযোগ ছিল সেটা পূরনের ! তাই সে ওভাবেই জীবন পাড়ি দিতে চাচ্ছিল , ভেবেছিল হয়ত তার স্বামীও অমত করবেনা সে ব্যাপারে


আমি জানি ব্যাপারটা  হয়তো ছেলেমানুষী ধরনের হবে, তাও তোমাকে একটা প্রশ্ন করতে পারি ? ”

হ্যাঁ বলো  ”


আয়ানে তার দিকে মুখ ফিরিয়ে জিজ্ঞেস করল , “ কিন্তু তুমি যে আমাকে ভালবাসো , সেটার কি হলো ?  ”

ইয়োশিতাকা কিছুক্ষনের জন্য স্থির হয়ে গেল , তবে ধীরে ধীরে তার মুখের সেই স্মিত হাসি আবার ফিরে এলো তোমার প্রতি আমার যে ভালবাসা , তা এখনো পাল্টায় নি সে বিষয়ে তুমি নিশ্চিত থাকতে পারো আমি এখনো  তোমাকে ভালবাসি

কথাটা যে পুরোপুরি মিথ্যে , তা নিয়ে আয়ানে এর কোনো সন্দেহ ছিলনা তবু সে হেসে জানালো , ব্যাপারটা জেনে সে খুশি হয়েছে আর কিভাবে কথাটার উত্তর দেয়া যায় , সেটা তার জানা ছিলনা


ইয়োশিতাকা উঠে দাঁড়ালো সোফা থেকে , “ চলো , তাহলে বের হই বলে দরজার  দিকে এগোতে লাগল

আয়ানে তার ড্রেসিং টেবিলের দিকে এক পলকের জন্য চোরা চাহনি দিল সেখানে লুকিয়ে রাখা সাদা পাউডারটার কথা তার মনে পড়ে গিয়েছে ; যেটা কিনা সে একটা সিলগালা প্লাস্টিকের ব্যাগে পুরে ,  সবচেয়ে নিচের ড্রয়ারের ভেতরে ডানদিকে লুকিয়ে রেখেছে

বোধয় অতি শীঘ্রই আমাকে ওটা ব্যবহার করতে হবে , সে মনে মনে ভাবল মনের ভেতর যতটুকু ক্ষীণ আশা ছিল , তা উবে গিয়েছে

ইয়োশিতাকার পিছু পিছু হাঁটতে গিয়ে তার কাঁধের দিকে তাকালো আয়ানে আমি তোমাকে পৃথিবীতে অন্যকিছুর থেকে অনেক বেশি ভালবাসি সেজন্যই তোমার কথাগুলো আমার হৃদয়ে ছুরির মত বিঁধেছে     আর জন্যই তোমাকে মরতে হবে   











অনুবাদকের কথা 

*প্যানজি ফুল 













আরো যা দেখতে পারেন