Saturday 30 November 2019

Helping hand




হেল্পিং হ্যান্ড
ক্লডিন গ্রিগস


আলেক্সান্ড্রিয়া স্টিফেন্স এর আগেই জানা ছিল, সে হিমশীতল, নিষ্ঠুর মহাশূন্যে খুব ধীরে ধীরে মারা যাবে
সে তার ক্যাপসুলের পনের মিটার ওপর ভাসছিলো ক্যাপসুলটা একজন আরোহীর জন্য তৈরি এক স্পেস শাটল, যা পৃথিবীর উঁচু কিংবা নিচু অক্ষে খুব সহজেই চালানো যায়  

                                                 *******

একজন আরোহী বিশিষ্ট শাটলগুলো অর্থনৈতিকভাবে অনেক সাশ্রয়ী, বিশেষ করে কৃত্তিম উপগ্রহ অথবা কক্ষপথ সম্পর্কিত সকল ধরনের কাজের লাভের হিসেব করলে তা অনেক ভালভাবেই টের পাওয়া যায় মুন-শাটলগুলো সঠিকভাবে চালাতে গেলে দুইজন থেকে ছয়জনের একটা দল লাগে তাই পৃথিবীর কক্ষপথে কাজ করতে গেলে ঐ এক আরোহী বিশিষ্ট শাটলগুলোই সবচেয়ে বেশি উপযোগী আলেক্সান্ড্রিয়ার শাটল বেশ মজবুত ও টেকসই ছিল সেটার দেখাশোনা করত গ্লেন মাইকেলস, যাকে আলেক্সান্ড্রিয়া নিজের আপন ভাইয়ের মতই বিশ্বাস করত তা সত্ত্বেও সে গ্লেন এর কাজের প্রতি সতর্ক নজর রাখত একসাথে বিয়ার এর বোতলে চুমুক দিতে দিতে তারা শাটলে কাজ করত, আর নতুন আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে তর্কাতর্কি করত তাদের দুজনেরই জানা ছিল, এই শাটলই তাদের সবকিছু ; যদি সমস্যা দেখা দেয়, তবে শাটল এর আরোহীর জীবন-মরণ এর টানাটানি পড়ে যাবে

কিন্তু বড় বড় কোম্পানিগুলোর জন্য এরকম হঠাৎ পাইলটদের মৃত্যু আসে যায় না ক্যালকুলেটর গুঁতানো আইনজীবী ও বিমা কোম্পানির লোকেরা হিসেব করিয়ে দেখিয়েছে যে, ‘স্পেস জকি ইনকর্পোরেটেডযদি প্রতি ১৮ মাস পরপর একটা শাটল ও তার পাইলটকে হারায়, তা সত্ত্বেও লাভটা তুলে আনতে পারবে এমনকি নতুন শাটল ও পাইলট নিয়োগের খরচ, পেনশন আরো অনেককিছুর খরচ মেটানোর পরেও কোম্পানির লাভ থেকে যাবে যদিও তারা সেটা চায়না, বরং পাইলটদের নিরাপত্তার প্রতি তাদের তীক্ষ্ণ নজর রয়েছে আর তাদের সত্যিকারের পাইলট ও শাটল হারানোর সংখ্যা হিসেব করে দেখা গিয়েছে গড়ে ৩২.৩ মাস অন্তর অন্তর তাদের একজন পাইলটের মৃত্যু ঘটে এ হিসেবের মধ্যে গতবছর ঈগল মনুমেন্ট নির্মান এলাকাতে যাওয়ার পথে  ট্র্যাঙ্কুয়ালিটি বেস এ তিনজন আরোহীসহ শাটল বিধ্বস্ত হবার ঘটনাটাও যোগ করা হয়েছে অবশ্য কোম্পানির প্রধানরা কেবল লাভের দিকেই বেশি নজর রাখে

আলেক্সান্ড্রিয়া যখন তার ফ্লাইট চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করছিলো, তার ভালমতই জানা ছিল কতরকমের বিপদ আসতে পারে তার সামনে কিন্তু যে পরিমাণ টাকা সে পাবে, তার অর্ধেক পেলেও সে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করে ফেলত বিপদ দ্বিগুন হলেও তার হাত একটুও কাঁপত না আটবছর বয়স থেকেই তার একজন বাণিজ্যিক পাইলট হবার স্বপ্ন ছিল। সে স্পেস জকি কোম্পানিতে প্রায় সাড়ে সাতবছর ধরে কাজ করছে। এতদিন ধরে কাজ করার ফলে সে ইতোমধ্যে ‘সবচেয়ে প্রতিভাবান’ ও ডিউটিতে ‘দ্রুত কাজ শেষ’ করার জন্য নাম কুড়িয়েছে। দু’বার সে সুপারভাইজার হবার পদটা ফিরিয়ে দিয়েছে, শাটলে কাজ করাতে ফিরে গিয়েছে কোনো ভ্রুক্ষেপ না করেই।

“মহাশূন্যে কাজ করার সময়ও ” সে শ্রাগ করে বলেছিল, “কলম পিষে কাজ করব, এটা ভাবতেও মন চায় না আমার। ”

No comments:

Post a Comment

আরো যা দেখতে পারেন